‘আর যে জনপদে আমরা ছিলাম সেখানকার অধিবাসীদেরকে জিজ্ঞেস করুন এবং যে যাত্রীদলের সাথে আমরা এসেছি তাদেরকেও। আমরা অবশ্যই সত্য বলছি [১]।’
[১] ইউসুফ-ভ্রাতারা ইতিপূর্বে একবার পিতাকে ধোঁকা দিয়েছিল। ফলে তারা জানত যে, এ বর্ণনায় পিতা কিছুতেই আশ্বস্ত হবেন না এবং তাদের কথা বিশ্বাস করবেন না। তাই অধিক জোর দেয়ার জন্য বললঃ আপনি যদি আমাদের কথা বিশ্বাস না করেন, তবে যে শহরে আমরা ছিলাম (অর্থাৎ মিসর), তথাকার লোকদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন এবং আপনি ঐ কাফেলার লোকজনকেও জিজ্ঞেস করতে পারেন যারা আমাদের সাথেই মিসর থেকে কেনান এসেছে। আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সত্যবাদী।
আলোচ্য আয়াতসমূহ থেকে আরো প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি সৎ ও সঠিক পথে থাকে; কিন্তু ক্ষেত্র এমন যে, অন্যরা তাকে অসৎ কিংবা পাপকাজে লিপ্ত বলে সন্দেহ করতে পারে তবে তার পক্ষে এ সন্দেহের কারণ দূর করা উচিত, যাতে অন্যরা কু-ধারণার গোনাহয় লিপ্ত না হয়। ইউসুফ ‘আলাইহিস্ সালাম-এর সাথে কৃত পূর্ববতী আচরণের আলোকে বিনইয়ামীনের ঘটনায় ভাইদের সম্পর্কে এরূপ সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক ছিল যে, এবারও তারা মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তাই এ সন্দেহ দূরীকরণের জন্য জনপদ অর্থাৎ মিসরবাসীদের এবং যুগপৎ কাফেলার লোকজনের সাক্ষ্য উপস্থিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তিগত আচরণের মাধ্যমেও এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। একবার তিনি উম্মুল-মু'মিনীন সাফিয়্যা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে সাথে নিয়ে মসজিদ থেকে এক গলি দিয়ে যাচ্ছিলেন। গলির মাথায় দু'জন লোককে দেখে তিনি দূর থেকেই বলে দিলেনঃ আমার সাথে সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই রয়েছে। ব্যক্তিদ্বয় আরয করলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার সম্পর্কেও কেউ কু-ধারণা করতে পারে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, শয়তান মানুষের শিরা-উপশিরায় গমন করে। কাজেই কারো মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয়া বিচিত্র নয়। [বুখারীঃ ৭১৭১, মুসলিমঃ ২১৭৪]