21:20 21:16 ایک تفسیر پڑھ رہے ہیں
وَمَا
خَلَقْنَا
السَّمَآءَ
وَالْاَرْضَ
وَمَا
بَیْنَهُمَا
لٰعِبِیْنَ
۟
لَوْ
اَرَدْنَاۤ
اَنْ
نَّتَّخِذَ
لَهْوًا
لَّاتَّخَذْنٰهُ
مِنْ
لَّدُنَّاۤ ۖۗ
اِنْ
كُنَّا
فٰعِلِیْنَ
۟
بَلْ
نَقْذِفُ
بِالْحَقِّ
عَلَی
الْبَاطِلِ
فَیَدْمَغُهٗ
فَاِذَا
هُوَ
زَاهِقٌ ؕ
وَلَكُمُ
الْوَیْلُ
مِمَّا
تَصِفُوْنَ
۟
وَلَهٗ
مَنْ
فِی
السَّمٰوٰتِ
وَالْاَرْضِ ؕ
وَمَنْ
عِنْدَهٗ
لَا
یَسْتَكْبِرُوْنَ
عَنْ
عِبَادَتِهٖ
وَلَا
یَسْتَحْسِرُوْنَ
۟ۚ
یُسَبِّحُوْنَ
الَّیْلَ
وَالنَّهَارَ
لَا
یَفْتُرُوْنَ
۟
3

১৬-২০ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, তিনি আকাশ ও যমীনকে হক ও ন্যায়ের সাথে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি অসৎ লোকদেরকে শাস্তি এবং সৎলোকদের পুরস্কার দেন। এগুলিকে তিনি খেল তামাশা ও ক্রীড়াচ্ছিলে সৃষ্টি করেন নাই। অন্য আয়াতে এই বিষয়ের সাথে সাথেই এই বর্ণনা রয়েছে যে, এইরূপ ধারণা কাফিররা পোষণ করে থাকে যাদের জন্য জাহান্নামের অগ্নি প্রস্তুত রয়েছে। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ আমি যদি খেল-তামাশা ও ক্রীড়ার উপকরণ চাইতাম তবে আমি আমার কাছে যা তা নিয়েই ওটা করতাম। এর একটি ভাবার্থ হচ্ছেঃ যদি আমি খেল-তামাশা চাইতাম তবে ওর উপকরণ বানিয়ে নিতাম। আমার কাছে যা আছে তা নিয়েই। আর তা হলে আমি জান্নাত, জাহান্নাম, মৃত্যু, পুনরুত্থান এবং হিসাব সৃষ্টি করতাম না। ইবনু আবি নাজাহ (রাঃ) এই অর্থ করেছেন। হাসান (রাঃ) ও কাতাদা (রাঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ যদি আমি স্ত্রীর ইচ্ছা করতাম তবে আমার কাছে যারা আছে তাদেরকেই করতাম। ইয়ামিন বাসীদের ভাষায় (আরবী) শব্দটি স্ত্রীর অর্থেও এসে থাকে। ইকরামা (রঃ) এবং সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, এখানে (আরবী) শব্দ দ্বারা সন্তান উদ্দেশ্য। কিন্তু এ দু'টি অর্থ পরম্পর সম্বন্ধ যুক্ত। স্ত্রীর সাথে সন্তানও রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ এক জায়গায় বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করার ইচ্ছা করলে তার সষ্টির মধ্যে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করতে পারতেন; পবিত্র ও মহান তিনি। তিনি আল্লাহ, এক, প্রবল পরাক্রমশালী।" (৩৯:৪) সুতরাং তিনি সন্তান গ্রহণ করা হতে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। হযরত ঈসা (আঃ) ও উযায়ের তাঁর পুত্র নন এবং ফেরেশতারা তাঁর কন্যাও নন। এই ইয়াহুদী, খৃস্টান ও মক্কার কাফিরদের এই বাজে কথা এবং অপবাদ হতে এক ও পরাক্রমশালী আল্লাহ পবিত্র ও উচ্চ। (আরবী) এর মধ্যে (আরবী) শব্দটি নেতিবাচক। অর্থাৎ ‘আমি এটা করি নাই।' মুজাহিদের (রঃ) উক্তি তো এই যে, কুরআনকারীমের মধ্যে (আরবী) সর্বক্ষেত্রেই নেতিবাচক রূপে এসেছে।আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আমি সত্য দ্বারা মিথ্যার উপর আঘাত হানি, ফলে তা মিথ্যাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয় এবং তৎক্ষণাৎ মিথ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ওটা বেশীক্ষণ টিকে থাকতে পারে না। যারা আল্লাহর জন্যে সন্তান সাব্যস্ত করছে, তাদের এই বাজে ও ভিত্তিহীন কথার কারণে তাদের দুর্ভোগ পোহাতেই হবে।এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যে ফেরেশতাদেরকে তোমরা আল্লাহর কন্যা বলছে তাদের অবস্থা শুনো এবং আল্লাহ তাআলার বিরাটত্বের প্রতি লক্ষ্য করো যে, আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত কিছু তারই অধিকারভুক্ত। ফেরেশতারা তাঁরই ইবাদতে নিমগ্ন রয়েছে। তারা যে কোন সময় তাঁর অবাধ্য হবে এটা অস। হযরত ঈসা (আঃ) আল্লাহ তাআলার বান্দা হওয়াতে শরম করেন না এবং ফেরেশতারাও তার ইবাদত করতে লজ্জাবোধ করেন না। তাদের কেউই অহংকারবশে তার ইবাদত করা হতে বিমুখ হয় না। যে কেউ এরূপ করবে তার জেনে রাখা উচিত যে, এমন একদিন আসছে যেই দিন সে হাশরের মাঠে সবারই সাথে তার সামনে হাজির হবে এবং স্বীয় কৃতকর্মের ফল ভোগ করবে। ঐ বুযুর্গ ফেরেশতামণ্ডলী দিবারাত্র আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্তও হয় না এবং শৈথিল্যও করে না। দিন রাত তারা আল্লাহর আদেশ পালনে, তাঁর ইবাদতে এবং তার তাসবীহ পাঠ ও আনুগত্যের কাজে লেগে রয়েছে। তাদের মধ্যে নিয়াত ও আমল উভয়ই বিদ্যমান। না তারা কোন সময় আল্লাহর নাফরমানী করে, না কোন আদেশ পালনে বিমুখ হয়।হযরত হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবীদের মজলিসে অবস্থান করছিলেন, ঐ সময় তিনি বলেনঃ “আমি যা শুনতে পাচ্ছি তা তোমরাও শুনতে পাচ্ছ কি?” সাহাবীরা উত্তরে বলেনঃ “আমরা তো কিছুই শুনতে পাচ্ছি না।” তখন তিনি বলেনঃ “আমি আকাশের চড়ুচণ্ডু শব্দ শুনতে পাচ্ছি। আর সত্য ব্যাপার তো এটাই যে, ওতে চডুচড়ু হওয়া স্বাভাবিক। কেননা তাতে কনিষ্ঠাঙ্গুলী পরিমিত স্থানও এমন নেই যেখানে কোন না কোন ফেরেশতার মস্তক সিজদায় পড়ে থাকে না।" (এ হাদীসটি ইবনু আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবদুল্লাহ ইবনু হারিস ইবনু নাওফাল (রঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “একদা আমি হযরত কা'ব আহবারের (রাঃ) কাছে বসেছিলাম। ঐ সময় আমি অল্প বয়স্ক বালক ছিলাম। আমি তাকে এই আয়াতের ভাবার্থ জিজ্ঞেস করলাম যে, ফেরেশতাদেরকে কি তাদের চলা, ফেরা, আল্লাহর পয়গাম নিয়ে যাওয়া, আমল করা ইত্যাদি ও তাসবীহ পাঠ করতে বিরত রাখে না? আমার এ প্রশ্ন শুনে তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “এ ছেলেটি কে?" জনগণ উত্তরে বললেনঃ “এটা বানু আবদিল মুত্তালিব গোত্রের ছেলে। তিনি তখন আমার কপাল চুম্বন করে বললেনঃ “হে প্রিয় বৎস! ফেরেশতাদের এই তাসবীহ পাঠ ঠিক আমাদের নিঃশ্বাস গ্রহণের মত। দেখো, চলতে, ফিরতে, কথা বলতে সব সময়েই আমাদের নিঃশ্বাস আসা যাওয়া করে থাকে। অনুরূপভাবে ফেরেশতাদের তাসবীহ পাঠও অনবরত চলতে থাকে।"