قُلْ
لَّاۤ
اَجِدُ
فِیْ
مَاۤ
اُوْحِیَ
اِلَیَّ
مُحَرَّمًا
عَلٰی
طَاعِمٍ
یَّطْعَمُهٗۤ
اِلَّاۤ
اَنْ
یَّكُوْنَ
مَیْتَةً
اَوْ
دَمًا
مَّسْفُوْحًا
اَوْ
لَحْمَ
خِنْزِیْرٍ
فَاِنَّهٗ
رِجْسٌ
اَوْ
فِسْقًا
اُهِلَّ
لِغَیْرِ
اللّٰهِ
بِهٖ ۚ
فَمَنِ
اضْطُرَّ
غَیْرَ
بَاغٍ
وَّلَا
عَادٍ
فَاِنَّ
رَبَّكَ
غَفُوْرٌ
رَّحِیْمٌ
۟
3

বল, আমার প্রতি যে প্রত্যাদেশ হয়েছে, তাতে আহারকারী যা আহার করে, তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না। তবে মৃতপ্রাণী, বহমান রক্ত ও শূকরের গোশত; কেননা তা অপবিত্র। অথবা (যবেহকালে) আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নেওয়ার কারণে যা অবৈধ।[১] তবে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে তা গ্রহণে বাধ্য হলে, তোমার প্রতিপালক অবশ্যই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

[১] এই আয়াতে যে চারটি হারাম জিনিসের কথা উল্লেখ হয়েছে তার প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ সূরা বাক্বারার ২:১৭৩ নং আয়াতের টীকায় অতিবাহিত হয়েছে। এখানে যে বিষয়টির উপর অতিরিক্ত আলোকপাতের প্রয়োজন তা হল এই যে, এই চারটি হারাম জিনিসকে 'কালিমা হাসর' তথা সীমিতকারী বাক্য দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছে। যার দ্বারা বাহ্যতঃ এটাই প্রতীয়মান হয় যে, এই চার প্রকার পশু ব্যতীত অন্য সব পশুই হালাল। অথচ বাস্তবে কিন্তু এই চার প্রকার পশু ছাড়াও আরো কিছু পশু শরীয়তে হারাম। তাহলে এখানে সীমিতকারী বাক্য দ্বারা কেন উল্লেখ করা হয়েছে? প্রকৃত ব্যাপার হল, এর পূর্ব থেকে মুশরিকদের জাহেলী যুগের চাল-চলন এবং তার খন্ডনের কথা চলে আসছে এবং এরই মধ্যে সেই পশুগুলোর কথাও এসেছে, যেগুলো তারা নিজেদের পক্ষ থেকেই হারাম করে নিয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বলা হচ্ছে যে, আমার প্রতি যে অহী করা হয়েছে তাতে এর উদ্দেশ্য হল, মুশরিকদের হারাম করে নেওয়া পশুগুলোর হালাল ঘোষণা দেওয়া। অর্থাৎ, সেগুলো হারাম নয়। কারণ, মহান আল্লাহ হারাম যে জিনিসগুলোর উল্লেখ করেছেন, তাতে তো এগুলো শামিলই নয়। যদি এগুলো হারাম হত, তবে আল্লাহ তাআলা এগুলোর উল্লেখ অবশ্যই করতেন। ইমাম শাওকানী এর বিশ্লেষণ এইভাবে করেছেন যে, এই আয়াত মক্কী হলে, তবে অবশ্যই এই সীমাবদ্ধতা মেনে নেওয়ার যোগ্য ছিল। কিন্তু যেহেতু কুরআনই সূরা মায়েদায় আরো কিছু হারাম জিনিস উল্লেখ করেছে এবং নবী করীম (সাঃ) ও কিছু হারাম জিনিস বর্ণনা করেছেন। অতএব, সেগুলোও এর মধ্যে শামিল হবে। এ ছাড়াও নবী করীম (সাঃ) পাখী ও হিংস্র জীবজন্তুর হালাল ও হারাম হওয়ার দু'টি মূল নীতি বর্ণনা করে দিয়েছেন, যার বিশ্লেষণও উল্লেখিত সূরার টীকায় বিদ্যমান রয়েছে। أَوْ فِسْقًا-এর সংযোগ হল لَحْمَ خِنْزِيْرٍ-এর সাথে। আর এ কারণেই যবর এসেছে। অর্থ হল, أَيْ:ذُبِحَ عَلَى الأَصْنَامِ "সেই পশু যা প্রতিমার নামে অথবা তাদের আস্তানায় তাদের নৈকট্য লাভের জন্য যবেহ করা হয়।" অর্থাৎ, এই ধরনের পশুগুলো আল্লাহর নামে যবেহ করা হলেও তা হারাম হবে। কেননা, এ থেকে আল্লাহর নৈকট্য নয়, বরং গায়রুল্লাহর নৈকট্য লাভ উদ্দেশ্য হয়। فسق হল আল্লাহর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নাম। প্রতিপালক কেবল তাঁরই নামে এবং তাঁরই নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে যবেহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। যদি এ রকম না করা হয়, তবে তা-ই হল 'ফিসক্ব' (অবাধ্যাচরণ) ও শিরক।