হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ইয়াহুদীরা বলতোঃ “পৃথিবীর মোট সময়কাল হচ্ছে সাত হাজার বছর। প্রতি হাজার বছরের পরিবর্তে আমাদের একদিন শাস্তি হবে। তা হলে আমাদেরকে মাত্র সাত দিন জাহান্নামে থাকতে হবে। তাদের এ কথাকে খণ্ডন করতে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। কারও কারও মতে তারা চল্লিশ দিন দোযখে থাকবে বলে ধারণা করতো। কেননা, তাদের পূর্বপুরুষরা চল্লিশ দিন পর্যন্ত বাছুরের পূজা করেছিল। কারও কারও মতে তাদের এই ধারণা হওয়ার কারণ ছিল এই যে, তাওরাতে আছেঃ “ দোযখের দুই ধারের ‘ যাম' নামক বৃক্ষ পর্যন্ত চল্লিশ দিনের পথ'-তাই তারা বলতো যে, এ সময়ের পরে শাস্তি উঠে যাবে।একটি বর্ণনায় আছে যে, তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সামনে বলেঃ “চল্লিশ দিন পর্যন্ত আমরা দোযখে অবস্থান করবো, অতঃপর অন্যেরা আমাদের জায়গায় এসে যাবে। অর্থাৎ আপনার উম্মত।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন তাদের মাথায় হাত রেখে বলেনঃ না, বরং তোমরা চিরকাল দোযখে অবস্থান করবে। সেই সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন যে, খাইবার বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমতে বিষ মিশ্রিত হাগলের গোশত ‘হাদিয়া স্বরূপ আসে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “তোমাদের বাপ কে?' তারা বলেঃ “অমুক।' তিনি বলেনঃ “তোমরা মিথ্যা বলছো, তোমাদের বাপ অমুক।' অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে বলেনঃ “আমি তোমাদেরকে কতকগুলো প্রশ্ন করবো, তোমরা ঠিক ঠিক উত্তর দেবে তো?' তারা বলেঃ ‘হ, হে আবুল কাসিম (সঃ)! আমরা যদি মিথ্যে বলি তবে আপনি জেনে ফেলবেন যেমন আমাদের বাপের ব্যাপারে জেনে ফেলেছেন। তখন তিনি বলেনঃ “আচ্ছা বল তো দোযখী কারা? তারা বলেঃ কিছু দিন তো আমরা দোযখে অবস্থান করবো, অতঃপর আপনার উম্মত আমাদের স্থলে অবস্থান করবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ ‘আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহর শপথ! তখনও আমরা তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবো না।অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে বলেনঃ “আচ্ছা, আমি তোমাদেরকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো, তোমরা সত্য বলবে তো?' তারা বলেঃ ‘হ, হে। আবুল কাসিম (সঃ)! তিনি বলেনঃ “তোমরা কি এতে (গোশতে) বিষ মিশিয়েছো?' তারা বলেঃ হাঁ।' রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “কেন?' তারা বলেঃ ‘এই জন্যে যে, যদি আপনি সত্যবাদী হন তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করবে না, আর যদি মিথ্যেবাদী হন, তবে আমরা আপনা হতে শান্তি লাভ করবো। (মুসনাদ-ই-আহমাদ, সহীহ বুখারী, সুনান-ই- নাসাঈ)।