যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ এবং তাঁর সাক্ষাৎ অস্বীকার করে, তারাই আমার করুণা হতে নিরাশ হয়।[১] আর তাদের জন্য আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
[১] পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত ও করুণা সকল সৃষ্টির জন্য ব্যাপক। যার দ্বারা মু'মিন-কাফের, মুখলিস-মুনাফিক, (একনিষ্ঠ-নিষ্ঠাহীন), ভাল-মন্দ সকল শ্রেণীর মানুষই উপকৃত হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ সকলকেই জীবন উপকরণ ও ধন-সম্পদ দিয়ে থাকেন। এটি আল্লাহর দয়ার সেই পরিব্যাপ্তি, যার সম্পর্কে তিনি বলেন,{وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ} অর্থাৎ, আমার দয়া প্রত্যেক বস্তুতে পরিব্যাপ্ত। কিন্তু পরকাল যেহেতু প্রতিদান ও প্রতিফল পাওয়ার জন্য; মানুষ দুনিয়াতে যে ফসল বপন করবে, সেই ফসল সে আখেরাতে কর্তন করবে। পৃথিবীতে যে যেমন কাজ করবে সেই অনুপাতে তাকে ফল দেওয়া হবে। সেদিন আল্লাহ পক্ষপাতহীন ফায়সালা দান করবেন। পৃথিবীর ন্যায় পরকালেও যদি মু'মিন-কাফের ও ভাল-মন্দের সাথে একই প্রকার ব্যবহার করা হয়, সবাই যদি আল্লাহর দয়ার যোগ্য হয়, তাহলে প্রথমতঃ আল্লাহর ন্যায় বিচারের উপর প্রশ্ন উঠবে এবং দ্বিতীয়তঃ কিয়ামতের উদ্দেশ্য অর্থহীন হয়ে পড়বে। মহান আল্লাহ কিয়ামত এই জন্যই অনুষ্ঠিত করবেন যে, যারা সৎকর্মশীল তাদেরকে সুখময় স্থান জান্নাত দান করবেন। আর যারা অসৎকর্মশীল তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক স্থান জাহান্নাম দান করবেন। সেই জন্য কিয়ামত দিবসে আল্লাহর রহমত একমাত্র মু'মিনদের জন্যই হবে। এখানেও উক্ত কথাই বর্ণনা করা হয়েছে যে, যারা পরকাল ও পুনর্জীবন অস্বীকার করবে, তাদের ভাগ্যে আমার রহমত জুটবে না। উক্ত কথাটি সূরা আ'রাফে এই ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে,{فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالَّذِينَ هُم بِآيَاتِنَا يُؤْمِنُونَ} অর্থাৎ, সুতরাং আমি তা (দয়া পরকালে) তাদের জন্য নির্ধারিত করব, যারা পরহেযগার হয়, যাকাত দেয় ও আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করে। (সূরা আ'রাফ ৭:১৫৬ আয়াত)