১-৪ নং আয়াতের তাফসীরএরপর আল্লাহ পাক বলেনঃ মুমিনদেরকেও পরীক্ষা না করেই ছেড়ে দেয়া হবে- এটা অসম্ভব। সহীহ হাদীসে এসেছেঃ “সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হয় মুমিনদের উপর, তারপর সৎ লোকদের উপর, এরপর তাদের চেয়ে নিম্ন মর্যাদার লোকদের উপর, এরপর তাদের চেয়েও নিম্ন মর্যাদার লোকদের উপর। পরীক্ষা তাদের দ্বীনের অনুপাতে হয়ে থাকে। যদি সে তার দ্বীনের উপর দৃঢ় হয় তবে তার পরীক্ষাও কঠিন হয় এবং বিপদ-আপদ তার উপর অবতীর্ণ হয়ে থাকে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে দাখিল হয়ে যাবে, যখন আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে এবং কে ধৈর্যশীল তা এখনও জানেন (৩:১৪২) অনুরূপ আয়াত সূরায়ে বারাআতেও রয়েছে। মহামহিমান্বিত আল্লাহ সূরায়ে বাকারায় বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যদিও এখনও তোমাদের নিকট তোমাদের পূর্ববর্তীদের অবস্থা আসেনি? অর্থ-সংকট ও দুঃখ-ক্লেশ তাদেরকে স্পর্শ করেছিল এবং তারা ভীত ও কম্পিত হয়েছিল। এমনকি রাসূল ও তার সাথে ঈমান আনয়নকারীরা বলে উঠেছিল- আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে? হ্যা, হ্যাঁ, আল্লাহর সাহায্য নিকটেই।” (২:২১৪) এই জন্যেই এখানেও বলেনঃ আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম, আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা সত্যবাদী ও কারা মিথ্যাবাদী। এর দ্বারা এটা মনে করা চলবে না যে, আল্লাহ এটা জানতেন না। বরং যা হয়ে গেছে। এবং যা হবে সবই তিনি জানেন। এর উপর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সমস্ত ইমাম একমত। এখানে (আরবি) অর্থ (আরবি) বা দেখার অর্থে ব্যবহৃত। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) (আরবি)-এর অর্থ (আরবি) করেছেন। কেননা, দেখার সম্পর্ক বিদ্যমান জিনিসের সাথে হয়ে থাকে এবং (আরবি) এর (আরবি) থেকে বা সাধারণ।আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ যারা মন্দ কর্ম করে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে? তাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ! অর্থাৎ যারা ঈমান আনয়ন করেনি তারাও যেন এ ধারণা না করে যে, তারা পরীক্ষা হতে বেঁচে যাবে। তাদের জন্যে বড় বড় শাস্তি অপেক্ষা করছে। তারা আল্লাহর আয়ত্তের বাইরে যেতে পারবে না। তাদের ধারণা খুবই মন্দ, যার ফল তারা সত্বরই জানতে পারবেন।