আল্লাহ তাআলা বলছেনঃ হে মুহাম্মদ (সঃ)! যেমন আমি তোমাকে আমার রাসূল করে পাঠিয়েছি এবং তোমার উপর আমার কিতাব নাযিল করেছি, উদ্দেশ্য এই যে, তুমি লোকদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে আসবে, অনুরূপ ভাবে আমি মূসাকে (আঃ) রাসুল করে বাণী ইসরাঈলের নিকট পাঠিয়েছিলাম। তাকে অনেক নিদর্শনও দিয়েছিলাম, যার বর্ণনা (আরবি) (১৭:১০১) এই আয়াতে রয়েছে, তাকেই ঐ একই নির্দেশ দিয়েছিলামঃ লোকদেরকে ভাল কাজের দিকে আহবান করো। তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে এবং অজ্ঞতা ও পথভ্রষ্টতা থেকে সরিয়ে হিদায়াতের দিকে নিয়ে এসো। তাদেরকে (বানী ইসরাঈলকে) আল্লাহর ইহসান সমূহের কথাস্মরণ করিয়ে দাও। সেগুলি হচ্ছেঃ তিনি তাদেরকে ফিরাউনের ন্যায় যালিমের গোলামী থেকে মুক্ত করেছেন, তাদের জন্যে নদীকে খাড়া করে দিয়েছেন, মেঘ দ্বারা তাদের উপর ছায়া করেছেন, ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ নামক খাবার তাদের উপর অবতীর্ণ করেছেন ইত্যাদি বহু নিয়ামত তাদেরকে দান করেছেন। এটা মুজাহিদ (রঃ) কাতাদা (রঃ) প্রভৃতি গুরুজন বর্ণনা করেছেন।এ সম্পর্কে একটি ‘মরিফু হাদীস এসেছে যা ইমাম আহমদ ইবনু হাম্বলের (রঃ) পুত্র আবদুল্লাহ (রঃ) তাঁর পিতার মুসনাদে হযরত উবাই ইবনু কাব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সঃ) (আরবি) এর তাফসীর করেছেন (আরবি) অর্থাৎ তাদেরকে আল্লাহর নিয়ামত সমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দাও।' এ হাদীসটি ইমাম ইবনু জারীর (রঃ) এবং ইমাম ইবনু আবিহাতিম (রঃ) মুহাম্মদ ইবন আব্বানের (রঃ) হাদীস হতে বর্ণনা করেছেন। এটাই অধিকতর সঠিক তাফসীর। আল্লাহ তাআলার উক্তিঃ এতে তো নিদর্শন রয়েছে পরম ধৈর্যশীল ও পরম কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্যে। অর্থাৎ আমি আমার বান্দা বানী ইসরাঈলের উপর যে ইহসান করেছি, তাদেরকে ফিরাউন ও তার কঠিন লাঞ্ছনা জনক শাস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছি এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্যে শিক্ষা ও উপদেশ রয়েছে, যারা বিপদের সময় ধৈর্য ধারণ করে এবং সুখের সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। যেমন কাতাদা (রঃ) বলেন, উত্তম বান্দা হচ্ছে সেই বান্দা, যে বিপদের (পরীক্ষার সময় ধৈর্য ধারণ করে এবং সুখের সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।অনুরূপ ভাবে সহীহ হাদীসে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “মুমিনের প্রত্যেক কাজই বিস্ময়কর। আল্লাহ তার জন্যে যে ফায়সালা করেন। সেটাই তার জন্যে কল্যাণকর হয়। যখন তার উপর কোন বিপদ পৌছে তখন সে ধৈর্য ধারণ করে এবং ওটাই তার পক্ষে হয় কল্যাণকর। পক্ষান্তরে যদি সে সুখ শান্তি লাভ করে তখন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং ওটার পরিণামও তার জন্যে কল্যাণকরই হয়ে থাকে।”