অবশেষে যখন রসূলগণ নিরাশ হল[১] এবং (লোকে) ভাবল যে, তাদেরকে মিথ্যা (প্রতিশ্রুতি) দেওয়া হয়েছে,[২] তখন তাদের কাছে আমার সাহায্য এল।[৩] অতঃপর আমি যাকে ইচ্ছা করলাম, তাকে উদ্ধার করা হল।[৪] আর অপরাধী সম্প্রদায় হতে আমার শাস্তি রদ করা হয় না।
[১] এ নৈরাশ্য স্বীয় সম্প্রদায়ের ঈমান নিয়ে আসার ব্যাপারে ছিল।[২] ক্বিরাআত হিসেবে এই আয়াতের কয়েকটা অর্থ করা হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে উপযুক্ত অর্থ এই যে, ظَنُّوا এর কর্তা القوم অর্থাৎ কাফেরদেরকে করা হোক। অর্থাৎ কাফেররা প্রথমে তো শাস্তির ধমক পেয়ে ভয় করল; কিন্তু যখন বেশি দেরী হল তখন ধারণা করল যে, পয়গম্বরের দাবি অনুসারে আযাব তো আসছে না, আর না আসবে বলে মনে হচ্ছে, সেহেতু বলা যায় যে, নবীদের সাথেও মিথ্যা ওয়াদা করা হয়েছে। উদ্দেশ্য নবী করীম (সাঃ)-কে সান্তনা প্রদান করা যে, তোমার সম্প্রদায়ের উপর আযাব আসতে দেরী হওয়ার কারণে ঘাবড়ানোর দরকার নেই, পূর্বের সম্প্রদায়সমূহের উপর আযাব আসতে অনেকানেক বিলম্ব হয়েছে এবং আল্লাহর ইচ্ছা ও হিকমত অনুসারে তাদেরকে অনেক অবকাশ দেওয়া হয়েছে, এমনকি রসূলগণ স্বীয় সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গেছেন এবং লোকেরা ধারণা করতে লেগেছে যে, তাদের সাথে আযাবের মিথ্যা ওয়াদা করা হয়েছে।[৩] এতে বাস্তবে মহান আল্লাহর অবকাশ দানের সেই নীতির কথা বর্ণনা করা হয়েছে, যা তিনি অবাধ্যদেরকে দিয়ে থাকেন, এমনকি এ সম্পর্কে তিনি স্বীয় নবীদের ইচ্ছার বিপরীতও অধিকাধিক অবকাশ দেন, তাড়াহুড়া করেন না। ফলে অনেক সময়ে নবীদের অনুবর্তীরাও আযাব থেকে নিরাশ হয়ে বলতে শুরু করেন যে, তাদের সাথে এমনিই মিথ্যা ওয়াদা করা হয়েছে। স্মরণ থাকে যে, মনের মধ্যে শুধু এ ধরনের কুমন্ত্রণার উদ্রেক ঈমানের পরিপন্থী নয়।[৪] এ উদ্ধারের অধিকারী শুধু ঈমানদাররাই ছিল।